পাথরকুচি
পাথরকুচি অতিপরিচিত একটি ঔষধি উদ্ভিদ। চিকিৎসার ক্ষেত্রে নানা প্রকার ঔষধি গাছ প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে। এর মধ্যে পাথরকুচি গাছ অন্যতম।
ভেষজ চিকিৎসার মধ্যেও এটি অত্যন্ত উপকারী একটি গাছ। চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে, পাথরকুচি পাতা নানা রোগের জন্য বিশেষ উপকারী।

পাথরকুচি পাতার ঔষধি গুণাগুণ
কিডনির পাথর অপসারণ:
পাথরকুচি পাতা কিডনি এবং গলগণ্ডের পাথর অপসারণে সহায়ক। দিনে দুবার ২ থেকে ৩টি পাতা চিবিয়ে অথবা রস করে খেলে উপকার মেলে।
পেট ফাঁপা দূর করতে:
অনেক সময় পেট ফুলে গেলে, প্রস্রাব আটকে গেলে বা আধোবায়ু সরছে না, চিনির সাথে ১-২ চা চামচ পাথরকুচি পাতার রস গরম করে সিকি কাপ পানির সাথে মিশিয়ে খেতে হবে।
শিশুদের পেট ব্যথায়:
শিশুর পেটব্যথা হলে, ৩০-৬০ ফোঁটা পাথরকুচি পাতার রস পেটে মালিশ করলে ব্যথা উপশম হয়।
কাটাছেঁড়ায়:

তাজা পাতা হালকা তাপে গরম করে কাটা বা থেতলে যাওয়া স্থানে সেঁক দিলে আরাম পাওয়া যায়।
মৃগী রোগে:
রোগাক্রান্ত সময়ে পাথরকুচি পাতার রস ২-১০ ফোঁটা করে মুখে দিলে উপকার পাওয়া যায়।
সর্দি দূর করতে:
পুরাতন সর্দি বা কফের ক্ষেত্রে পাথরকুচি পাতার রস গরম করে, তার সাথে সামান্য সোহাগার খৈ মিশিয়ে প্রতিদিন ২ বার খেলে উপকার পাওয়া যায়।
পাইলস নিরাময়:
পাথরকুচি পাতার রসের সাথে গোল মরিচ মিশিয়ে পান করলে পাইলস ও অর্শ রোগ থেকে মুক্তি মেলে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে:
উচ্চ রক্তচাপ এবং মূত্রথলির সমস্যায় পাথরকুচি পাতার রস অত্যন্ত কার্যকর।
বিষাক্ত পোকায় কামড়ালে:
পাতার রস আগুনে সেঁকে লাগালে পোকায় কামড়ানোর যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
কলেরা, ডায়রিয়া ও রক্ত আমাশয়:
তিন মিলিলিটার পাতার রসের সাথে ৩ গ্রাম জিরা এবং ৬ গ্রাম ঘি মিশিয়ে কয়েক দিন খেলে উপকার পাওয়া যায়।
ত্বকের যত্নে:
পাথরকুচি পাতায় প্রচুর পানি থাকায় এটি ত্বকের জন্য উপকারী। ব্রণ ও ফুস্কুড়ি দূর করতে পাথরকুচি পাতা বেটে ত্বকে লাগানো যায়।
জন্ডিস নিরাময়ে:
পাথরকুচি পাতা জন্ডিসের মহাঔষধ হিসেবে পরিচিত। এটি লিভারের যেকোনো সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
শেষ কথা:
পাথরকুচি পাতা প্রকৃতির এক অসাধারণ দান। এর ঔষধি গুণাগুণ বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে অত্যন্ত কার্যকর। কিডনি পাথর থেকে শুরু করে ত্বকের যত্ন, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং পাইলস নিরাময়ে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত এবং সঠিক উপায়ে পাথরকুচি পাতা ব্যবহারে স্বাস্থ্যের নানা উপকারিতা পাওয়া সম্ভব। তবে কোনো সমস্যায় ভেষজ চিকিৎসা গ্রহণের আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।