একটি আদর্শ পরিবার গঠনে করনীয় বিষয় সমূহ:

Tottho Upatto

আমরা সবাই কোন না কোন পরিবারের বসবাস করি। একটি আদর্শ পরিবার গঠনে আমাদের সকলেরই কম-বেশি দায়িত্ব রয়েছে। একটি আদর্শ পরিবার গঠনে কিছু নিয়ম-কানুন অত্যাবশ্যকীয়। যে নিয়ম-কানুন গুলো শুধু বাচ্চারা না সব বয়সী সদস্যরাই মেনে চলবে।

পরিবার গঠনে একে অপরের প্রতি হৃদ্যতা ও ভালোবাসা থাকাটা খুবই জরুরী। আপনি কখনোই একটি আদর্শ পরিবার গঠন করতে পারবেন না যতক্ষণ না একে অন্যজনকে ভালবাসতে শিখবেন। ভালোবাসা দিয়ে অনেক কিছুই জয় করা যায়, তাই একে অপরকে ভালোবাসুন। নিজেদের মাঝে বন্ধন গড়ে তুলুন। ছোটদেরকে শিখাবেন কিভাবে ভালবাসতে হয়। তবে হ্যাঁ পরিবারের ভিত্তি শুধু ভালোবাসার উপরেই টিকে থাকে না, একটা পরিবার টিকে থাকে আপোষ ও বিশ্বাসের উপরে। বিশ্বাসবিহীন পরিবার কখনোই একটি আদর্শ পরিবার হতে পারে না। তাই আমাদের পরিবারের সকলকে একে অপরকে বিশ্বাস করতে হবে। আপনার ছোটদেরকে স্নেহ করুন এতে করে দেখবেন ছোটরা আপনাকে সম্মান করা শিখবে।

ছোটদের সাথে কোমল ব্যবহার করুন। তাদেরকে নৈতিক শিক্ষা দান করুন।একে অপরকে আপন মনে করতে হবে। বাইরের মানুষ আপনার আপন নয় পরিবারের মানুষই আপনারা আপন। একজন আরেকজনকে লেবাস অর্থাৎ পোশাক স্বরূপ মনে করতে হবে। আপনি যদি আপনার পরিবারের লোককে সবথেকে বেশি প্রাধান্য দেন এবং তাদেরকে আপন মনে করেন তাহলে দেখবেন আপনার জীবনে কোন কষ্টই থাকবে না। অপরের সাথে বিনয়ের সাথে কথা বলুন। সকলের সাথে নম্র ব্যবহার করুন। আপনি যত বিনয়ী হবেন দেখবেন আপনার পরিবারের অন্যান্যরা আপনাকেই অনেক বেশি ভালবাসবে ও সম্মান করবে। রাগ করে, ক্ষমতা দেখিয়ে কখনোই কিছু লাভ করা যায় না। বিনয় ও নম্রতার সাথে অনেক কিছুই লাভ করা যায়।পরিবারের সবাইকে বিনোদন দেওয়ার জন্য মাঝে মাঝে তাদেরকে নিয়ে বাইরে ঘুরতে যেতে পারেন। তাদের সাথে একসাথে বসে খাবার খাবেন। সাধ্যমত একে অন্যকে গিফট দিবেন।

Tottho Upatto

ইসলামী শিক্ষার সঠিক লক্ষ্য-উদ্দেশ্য হচ্ছে সত্যবাদী মুমিন’ ‘রক্ষণশীল প্রতিনিধি’ এবং দৃঢ়-বিশ্বাসী’ মানুষ তৈরি করা। আল্লাহর পরিচয় জানা ও আল্লাহর সাথে সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে ইহকালীন ও পরকালিন মুক্তি অর্জন করা। এ লক্ষ্য-উদ্দেশ্য অর্জন করা একমাত্র পরিতৃপ্ত ঈমানী শক্তি দ্বারাই সম্ভব। প্রতিনিধিত্বমূলক দায়িত্বশীলতার মাধ্যমে সামনের দিক এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রত্যয়ী হতে হবে। এছাড়াও সঠিক অনুভূতি, বাস্তবধর্মী কর্ম পদ্ধতি, হৃদয়ের সাহস, আমানত ও বিশ্বাসের দৃঢ়টা এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে আবশ্যিক উপকরণ। কাজের দক্ষতা এবং সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন ছাড়া এ লক্ষ্যে পৌঁছা কোনো ক্রমেই সম্ভব নয়।

আর সম্ভাবনাময় একজন মানুষ গঠন করতে হলে, এ সকল উন্নত গুণাবলীর বীজ মানব শিশুর মূল উৎস শিশু বয়সেই স্থাপন করতে হবে। এ জন্যই পরিবার এবং পারিবারিক সুসম্পর্কই হচ্ছে শিশুদের ইসলামী শিক্ষা তথা নববী শিক্ষার কারিকুলামের মূল ভিত্তি। কারণ, পরিবারই শিশুর মানসিক ও বৈষয়িক বিকাশের সর্বপ্রথম আশ্রয়স্থল। একটি মানব শিশু তার মানসিক ও বৈষয়িক যে কোনোও ধরনের প্রয়োজন পূরণে অক্ষম অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে। তখন একমাত্র পরিবারই তার সকল প্রকার প্রয়োজন পূরণে সহায়তা ও ব্যবস্থা করে তাকে সুন্দরভাবে লালন-পালনের যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। এজন্যই পরিবার গঠন ও পরিবারের সুসম্পর্কই হচ্ছে মানবিক গঠন ও বিকাশের প্রাণকেন্দ্র। যার ওপর ভিত্তি করে মানবিক ব্যক্তিত্ব গড়ে ওঠে।

এজন্যই পবিত্র আল-কুরআন ও রাসূলের বাণী এবং মানবতার মুক্তির ধর্ম ইসলাম পরিবার এবং পরিবারের সুসম্পর্ককে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে এবং ব্যক্তি ও সমাজ গঠনে পরিবারকে প্রথম বীজ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। আমাদেরকে তাই পরিবার এবং পারিবারিক সুসম্পর্ক বিষয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে জানতে হবে যাতে সঠিকভাবে পরিবার ও পারিবারিক সম্পর্কের মূল্যায়ন করে মুসলিম শিশুদেরকে যথাযথ তা‘লীম-তরবিয়তের ব্যবস্থা করে সঠিকভাবে লালন পালন করা যায়। তাদের থেকে পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও পরিস্থিতির আগ্রাসনের শিকার, অন্ধবিশ্বাস, ভ্রান্ত-অনুকরণ, বিচ্যুতি এবং চিন্তার স্থবিরতা ইত্যাদি অপসারণ করা যায়। বিশেষ করে বর্তমান চ্যালেঞ্জের মোকাবেলায় মুসলিম জাতিকে যেন হিফাযত করা যায়।